ব্রেকিং নিউজ ::
বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশে বিশ্বস্ত গণমাধ্যম মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের প্রথম জাতীয় দৈনিক আমাদের’৭১ পত্রিকার প্রিন্ট ও অনলাইন সংস্করণে আপনাকে স্বাগতম। নতুন আঙ্গিকে প্রকাশিত প্রিন্ট কপির জন্য আজই হকারকে বলে রাখুন।।
সংবাদ শিরোনাম ::
উদ্বোধনের অপেক্ষায় ভোলাহাট ফিলিং স্টেশন ভোলাহাটে উপজেলা প্রশাসনের আইন-শৃঙ্খলা কমিটির মাসিক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত। গেটম্যানের অবহেলায় ঝুঁকি নিয়ে চলছে যানবাহন : প্রাণনাশের আশংকা সর্বদলীয় বৈঠক ডাকার আহ্বান জামায়াত আমীরের আওয়ামী লীগের দোসররা নৈরাজ্য সৃষ্টির পাঁয়তারায় লিপ্ত রয়েছে: ফখরুল ইসি পুনর্গঠন ছাড়া নির্বাচনে যাবে না এনসিপি মতিঝিল আইডিয়ালে শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি মামলার পর ১ দিনে ৪ অভিযোগ: কর্তৃপক্ষ নিরব ‘বিভাজনমূলক’ বক্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ মাহফুজের লালপুরে নারী কর্মচারীর ভিডিও ফাঁস করায় সুগার মিলের সিআইসিকে সাময়িক বরখাস্ত। লালপুরে ট্রেনে কাঁটা পড়ে বৃদ্ধের মৃত্যু

মতিঝিল আইডিয়ালে শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি মামলার পর ১ দিনে ৪ অভিযোগ: কর্তৃপক্ষ নিরব

  • আপডেট টাইম : Thursday, May 22, 2025
  • 228 Time View
ছবি- সংগৃহীত ( শফিকুল ইসলাম খান)

৭১ ডেস্ক :: মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের আলোচনা-সমালোচনা লেগেই আছে। রাজধানীর অন্যতম সেরা এই প্রতিষ্ঠানের বির্তক যেন পিছু ছাড়ছে না। প্রতিষ্ঠানের মুগদা শাখার সহকারী শিক্ষক শফিকুল ইসলাম খানের বিরুদ্ধে গত ১৬ এপ্রিল ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে যৌন হয়রানি মামলা দায়েরের পর এবার শিক্ষার্থীদের দিয়ে জোরপূর্বক শ্রেণি শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ লেখানোর অভিযোগ উঠেছে। সোমবার (১৯মে) ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও সভাপতির নিকট পৃথক চারটি অভিযোগপত্র দাখিলের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায় গত ১৩ মে মঙ্গলবার মুগদা শাখার প্রভাতী বাংলা মাধ্যমের সহকারী শিক্ষক (ইসলাম শিক্ষা) শফিকুল ইসলাম খান স্কুল ছুটির পর জনাব গাজী শাহেদ ও জনাব মতিয়ার রহমান দুই শিক্ষকের সহযোগিতায় ৭ম শ্রেণির নাইমুর রহমান, আবু সুফিয়ান ও গোলাম আল ওয়াসিকে ধরে এনে ৪০২ নং কক্ষে আটকে রাখেন এবং কক্ষের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ করে দেন। তখন শফিক খানের নিজ হাতে লিখিত কয়েকটি কাগজ দেখে দেখে ছাত্রদের লিখে কপি করে দিতে বলেন। ছাত্ররা শফিক খান স্যারের লেখা পড়ে দেখে লেখাটি তাদের আরেক শিক্ষক জনাব এস এম হাদিউজ্জামান স্যারের বিরুদ্ধে যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। ছাত্ররা তখন ভয় পেয়ে যায় এবং স্যারের লেখা কপি করতে অপারগতা প্রকাশ করে। একপর্যায়ে শফিক খান স্যার তাদের ভয়ভীতি দেখিয়ে জোরপূর্বকে উদ্দেশ্য হাসিল করেন। এরপর ছাত্ররা মানসিক বির্পযস্ত হয়ে বাসায় গেলে অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং বিষয়টি অভিভাবকদের অবহিত করেন। অভিভাবকগণ তখন শিক্ষক হাদিউজ্জামান স্যারকে বিষয়টি সরাসরি জানান এবং সন্তানের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন।

এ প্রসঙ্গে শিক্ষক শফিকুল ইসলাম খান স্যারের ব্যক্তিগত মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে সংবাদকর্মী পরিচয় পেলে ফোন কেটে দেন।

ভুক্তভোগী শিক্ষক এস এম হাদিউজ্জামান স্যারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, স্যার কোন উদ্দেশ্যে এমন কাজটি করেছেন আমার জানা নেই। তবে স্যারের তৃতীয় সন্তান প্রসবকালে গতবছর উনার স্ত্রীকে আমি নিজেই রক্ত দিয়েছি। এটা মনে হয় তার প্রতিদান। কিন্তু কোমলমতি শিশুদের অনৈতিক কাজে ব্যবহার করা জঘন্য অপরাধ। আমি যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট সুবিচার দাবী করি।

৭ম শ্রেণির ছাত্র আবু সুফিয়ানের মা মোসা. সাবিনা ইয়াসমিন জানান– আমার সন্তানকে গত ১৩ মে, ২০২৫ খ্রি. রোজ- মঙ্গলবার স্কুল ছুটির পর শফিক খান স্যার ৪০২ নম্বর কক্ষে আটকে রেখে জোরপূর্বক হাদিউজ্জামান স্যারের বিরুদ্ধে লিখিত নেন। স্যারের নিজের হাতে লেখা জোর করে কপি করান। আমার সন্তান বাসায় গিয়ে ভয়ে কাঁপতে থাকে। আমি অফিস থেকে ফিরে ছেলের এই অবস্থা দেখে ভয় পেয়ে যাই এবং ঘটনা জানার চেষ্টা করি। ছেলে এক পর্যায়ে কেঁদে ফেলে এবং বলে শফিক খাঁন স্যার জোর করে আমাকে দিয়ে আমার ক্লাসের বাংলা শিক্ষক হাদি স্যারের বিরুদ্ধে লিখিত নেন। আমি লিখতে না চাইলে স্যার বলল- ভয় নেই কেউ জানবে না। হাদি স্যার জানবে না, তোমার আব্বা আম্মা ও জানবেনা।

জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, আমার প্রশ্ন হলো- একজন শিশু বাচ্চাকে কেন এই বিষয়ে জড়িত করা হলো? আমার সন্তান এরপর থেকে স্কুলে যেতে চাই না। সে মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। পরদিন তার ১০৩ ডিগ্রী জ্বর হয়েছিল। এখন আমি আমার সন্তান নিয়ে মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত। একজন শিক্ষক কিভাবে এমন জঘন্য কাজ করতে পারেন? কোন বিশ্বাসে আমি ছেলেকে স্কুলে পাঠাবো? সকল স্যারদের, ব্যাপারে আমার সন্তানের এখন বিরূপ ধারণা জন্মেছে। একজন অভিভাবক হিসেবে স্কুলের প্রতি আস্থা কোথায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে? পিতৃতুল্য শিক্ষকদের নিকট ছাত্ররা কতটুকু নিরাপদ! এ আশঙ্কায় আমি দুঃচিন্তাগ্রস্থ। স্যার কেন কোন স্বার্থে আমার সন্তানকে দিয়ে এই ঘৃণিত কাজটি করালো? অভিভাবক হিসেবে আমি আমার সন্তানকে মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত করার জন্য বিচার দাবি করছি।

৭ম শ্রেণির ছাত্র নাইমুর রহমানের মা নাজমা আক্তার বলেন, আমার সন্তান বাসায় গিয়ে ভয়ে কাঁপতে থাকে। আমি ছেলের এই অবস্থা দেখে ভয় পেয়ে যায় এবং ঘটনা জানার চেষ্টা করি। ছেলে এক পর্যায়ে কেঁদে ফেলে এবং বলে শফিক খাঁন স্যার আমাকে রুমে আটকিয়ে জোর করে আমাকে দিয়ে হাদি স্যারের বিরুদ্ধে লিখিত নেন। এরপর আমার ছেলে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে। আমি এটার সুষ্টু বিচার দাবী করি।

৭ম শ্রেণির আরেক ছাত্র গোলাম আল ওয়াসিকের মা শাহনাজ সুলতানা বলেন, আমার সন্তান এখন স্কুলে যেতে চাই না। সে মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। কান্নাকাটি করছে। আমিও আমার সন্তান নিয়ে মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত। কোন উদ্দেশ্যে স্যার এই কোমলমতি শিশুদের ব্যবহার করলো? আমি এর দৃষ্টান্ত মূলক বিচার চাই যাতে ভবিষ্যৎ-এ কোনো শিক্ষক এমন জঘন্য কাজ করতে সাহস না পায়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অভিভাবক বলেন, শফিক স্যারের বিরুদ্ধে অভিযোগ নতুন কিছু নয়। সম্প্রতি উনার নামে যৌন হয়রানির মামলা পর্যন্ত হয়েছে। কিন্তু সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কারণে সব পার পেয়ে যাচ্ছে।

অভিভাবকদের সংগঠন অভিভাবক ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউল কবীর দুলু বলেন, অসুস্থ থাকার কারণে কিছুদিন অভিভাবকদের সাথে সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছ। বিদ্যালয়ের বিভিন্ন গ্রুপিং এর কারণে এধরনের ঘটনা ঘটছে। আমিও বিভিন্নভাবে লাঞ্চনার স্বীকার হয়েছি। বিদ্যালয়ে চেইন অব কমান্ডের অভাব রয়েছে। সঠিক বিচার না করলে এ ধরনের ঘটনা পুনরায় ঘটার আশঙ্কা আছে। পাশাপাশি এ ঘটনা গুলো আইডিয়ালের মতো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তিও চরম ক্ষুন্ন করছে।

প্রতিষ্ঠানের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোহাম্মদ ফেরদাউস স্যারের নিকট বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, শিক্ষকদের মধ্যে পরস্পর পাল্টাপাল্টি অভিযোগ রয়েছে। দুজনই আমার শিক্ষক। দুজনকে দেখার দায়িত্ব আমার। আমি তখন অফিসে ছিলাম না। অভিভাবকদের অভিযোগ বিষয়ে এখন কিছু বলতে পারছি না।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর...
All rights reserved @ The Daily Amader 71
Site Customized By NewsTech.Com