পাবনা প্রতিনিধি :: রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের বর্তমান প্রকল্প পরিচালক এবং নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. জাহেদুল হাছানের বিরুদ্ধে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন প্রায় ১৫শ’ জন কর্মকর্তা-কর্মচারি।
তাঁর বিরুদ্ধে চরম অদক্ষতা, প্রশাসনিক স্বেচ্ছাচারিতা, প্রতিষ্ঠানিক স্বৈরতন্ত্র, দূর্নীতি এবং অনিয়ম-অব্যবস্থাপনার অভিযোগ তুলে ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদ থেকে অপসারণের দাবিতে মঙ্গলবার (০৬ মে) বিকালে ঈশ্বরদী শহরের আড্ডাখানা রেস্টুরেন্টে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন প্রকল্পের সিনিয়র সহকারী ব্যবস্থাপক ফাহিম শাহরিয়ার তুহিন।
অভিযোগ সম্পর্কে ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. জাহেদুল হাছানের সাথে মোবাইলে জানতে চাইলে তিনি বলেন; আলোচিত অভিযোগগুলো সঠিক নয়। এই দাবি গুলো বাস্তবায়নের কোনো এক্তিয়ার আমার নেই। এটা ১১ সদস্যের যে বোর্ড আছে তাদের সিদ্ধান্তের ব্যাপার। আমার ক্ষমতায় যেটুকু ছিল সেই সার্ভিস রুলস দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন; রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুত কেন্দ্র থেকে এখনো কোনে আয় শুরু হয়নি। প্রতি বছর বেতন বাবদ দুইশ’ কোটি টাকা ব্যায় হয়। এই বিষয়গুলোও তাদের ভাবা উচিত। তাদের অভিযোগগুলো অনেকটা ব্যক্তি আক্রোশমূলক। কারন আমার অবসরে যাওয়ার মাত্র ২৫ দিন আছে। এই সময় এ ধরনের অভিযোগ উদ্দেশ্যমূলক।
আন্দোলনের নেতা ফাহিম শাহরিয়ার তুহিন আরও বলেন; গত ২৮ এপ্রিল থেকে ৬ই মে পর্যন্ত কর্মকর্তা-কর্মচারিরা অবস্থান কর্মসুচী পালন করেছেন। কিন্তু উর্ধতন কর্তৃপক্ষ এখনো কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহন করেননি। অথচ পিডি ড. জাহেদুল হাছান বর্তমানে একাধিক অতি গুরুত্বপুর্ণ পদ কুক্ষিগত করে রেখেছেন। একাধারে তিনি রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুত প্রকল্পের পরিচালক এবং অপারেটিং অর্গানাইজেশন এনপিসিবিএল এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক, প্রধান মানবসম্পদ কর্মকর্তা, প্রধান অর্থ ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা এবং স্টেশন ডিরেক্টর প্রভৃতি পদ একাই দখল করে রেখেছেন। এটি বিদ্যুতকেন্দ্র অপারেটিং কোম্পানির ক্ষেত্রে নজিরবিহীন। অথচ এইসব পদের দায়িত্ব পালনের প্রয়োজনীয় শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা তাঁর নেই।
কর্মকর্তা- কর্মচারিদের অনেকেরই অভিযোগ, প্রকল্প পরিচালকের স্বেচ্ছাচারিতা ও দুর্নীতি নতুন কিছু নয়- সম্প্রতি তিনি মোটা অঙ্কর টাকার বিনিময়ে সম্পূর্ণ অযোগ্য ও অদক্ষ প্রতিষ্ঠানকে ক্যান্টিন বরাদ্দ দিয়েছেন এবং তাঁর অবৈধ্য কাজে অসহযোগিতা পেলে হয়রানির উদেশ্যে শোকজ, স্ট্যান্ড রিলিজ, ট্রান্সফার, এমনকি কর্মকর্তাদের প্রবেশ কার্ডও ব্লক করছেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়; তিনি নিজের কর্তৃত্ব বিস্তারের অপচেষ্টায় উল্লেখিত পদে জনবল নিয়োগে কোনো চেষ্টা ও তোয়াক্কা করেননি ড. জাহেদুল হাছান।
ফাহিম শাহরিয়ার আরও বলেন, প্রায় এক দশক আগে এনপিসিবিএল গঠন করা হলেও এখনো পর্যন্ত কোনো সার্ভিস রুল প্রকাশ করা হয়নি। ফলে অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারি গ্রেড ও বেতন বৈষম্য এবং অন্যান্য ব্যাসিক সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত।
সংবাদ সম্মেলনে প্রতিষ্ঠানের কাজের গতি ফিরিয়ে আনতে অবিলম্বে ড. জাহেদুল হাছানকে ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পদ থেকে অপসারণের দাবি জানানো হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে বহু সংখ্যক কর্মকর্তা-কর্মচারি উপস্থিত ছিলেন।